শুধু রবীন্দ্রনাথের নয়, কারো চেনাই ‘কোনো কালেই ফুরাবে না’। এই যেমন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অচেনা আকাশ খুঁজে ফিরছেন, সব সময়। এ রকমই আকাশ-অনুসন্ধানী একদল বিজ্ঞানী দখিনা আকাশে সন্ধান চালিয়ে নতুন ১০ লাখ ছায়াপথের (গ্যালাক্সি) দেখা পেয়েছেন। ‘নতুন’ মানে, এসব ছায়াপথ আগে অনাবিষ্কৃত ছিল।
আমাদের ছায়াপথের নাম আমরা রেখেছি ‘আকাশগঙ্গা’। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে মারচিসন মানমন্দিরের একটি বেতার টেলিস্কোপ আকাশগঙ্গার ‘পেছনে’ থাকা মোট ত্রিশ লাখ ছায়াপথের মানচিত্র তৈরি করেছে। অ্যাসক্যাপ টেলিস্কোপে ধরা পড়া এসব ছায়াপথের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই ছিল অভূত। গতকাল অ্যাস্ট্রনমিকাল সোসাইটি অব অস্ট্রেলিয়া জার্নালে এ বিষয়ে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ হয়। এর আগের দিন অ্যাসক্যাপের প্রধান বিজ্ঞানী আইদান হোতান দ্য কনভারসেশনে একটি প্রবন্ধে এই অনুসন্ধানের খবর জানান।
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা সিসাইরো। এই সংস্থার টেলিস্কোপ অ্যাসক্যাপ (অস্ট্রেলিয়ান স্কোয়ার কিলোমিটার অ্যারে পাথফাইন্ডার)। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই বেতার টেলিস্কোপের এমন আবিষ্কারের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন অনেক কিছুই জানতে পারবে পৃথিবী।
বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণার তুলনামূলক নতুন ক্ষেত্র। ১৯৩০-এর দশকে এ বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মলংলো স্কাই সার্ভে একটি বেতার টেলিস্কোপ। প্রায় ১০ বছরের অনুসন্ধান শেষে ২০০৬ সালে টেলিস্কোপটি পুরো আকাশের মাত্র ২৫ ভাগ স্ক্যান করতে পেরেছিল। অ্যাসক্যাপ সম্পর্কে আইদান হোতান লিখেছেন, ‘সিসাইরোর জ্যোতির্বিজ্ঞান ও মহাকাশ বিজ্ঞান বিভাগে আমাদের দল ওই রেকর্ড গুঁড়িয়ে দিয়েছে। মাত্র ১০ দিনে [অ্যাসক্যাপ] আকাশের ৮৩ ভাগ স্ক্যান করে ফেলেছে।’
এই টেলিস্কোপের কল্যাণে মহাবিশ্বের নতুন মানচিত্র তৈরিতে জোড়া দিতে হয়েছে মাত্র ৯০৩টি ছবি। অপরদিকে অন্যান্য সব আকাশ জরিপের ক্ষেত্রে লাখখানেক ছবির প্রয়োজন পড়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক ড. ডেভিড ম্যাককনেল বলেছেন, ‘ভবিষ্যতের অনুসন্ধানে আমরা কোটিখানেক ছায়াপথ শনাক্তের প্রত্যাশা করছি।’
Leave a Reply